সমসাময়িক বলদের লেখা পড়ে কেবল একটা কথাই মনে হচ্ছে বইতে ছেলে মেয়েরা ট্রান্সজেন্ডার শব্দটা পড়বে আর পড়েই তারা ট্রান্সজেন্ডার হয়ে যাবে । ব্যাপারটি এই রকম? কেউ ব্যক্তিগত ভাবে নিজেকে কী মনে করে সেটা নিয়ে আমাদের কারো মাথা ঘামানোর দরকার নেই । একজন ছেলে যদি নিজেকে মেয়ে মনেই করে, তাতে তোমার আমার কী এতো চিন্তার ? তোমাকে তো আর সে বিয়ে করতে চাইছে না । কেবল একজন ছেলে/মেয়ে নিজেদের বিপরীত লিঙ্গেরই না আরও অনেক কিছুই মনে করতে পারে । গরু গাধা ভেড়া কুকুর বিড়াল যা ইচ্ছে ভাবতে পারে । তাকে তাকে তার মত থাকতে দাও ।
যেমন আমি বাঙ্গি একদম পছন্দ না । দুই চোক্ষে এই ফলটাকে দেখতে পারি না । এখন আমি যদি যারা বাঙ্গি খায় পছন্দ করে তাদের অস্বাভাবিক বলি, তাদেরকে ঘৃণা করি তাতে ব্যাপারটা কেমন মনে হবে? যারা বাঙ্গি পছন্দ করে এমন অনেকের সাথে আমার স্বাভাবিক পরিচয় স্বাভাবিক আচরণ। এই ট্রান্সজেন্ডার ব্যাপারটা আমার নিজের কাছে একটু অপছন্দের হলেও কেউ যদি সত্যিই নিজেকে এমনটা মনে করে, মনে করে যে সে আসলে মেয়ে হয়ে জন্মেছে কিন্তু তার ভেতরে ছেলের সত্ত্বা রয়েছে এবং সেই পরিচয়ই সে রাখতে চায় তাহলে এতে আমার কোন আপত্তি নেই । সমস্যা হচ্ছে অন্য জায়গায় ! সমস্যা হচ্ছে যখন রাষ্ট যখন তাকে স্বীকৃতি দিবে তখন! মানে হচ্ছে যখন একজন পুরুষ নিজেকে নারী হিসাবে পরিচয় দিবে এবং অফিশিয়ালী যখন সেটা স্বীকৃতি পাবে তখন তার পরিচয় হবে নারী । তখন সে নারীদের লাইনে গিয়ে দাড়াবে। এবং এখানেই সমস্যাটার সৃষ্টি ।
ধরেন, লেডিস টয়লেট । এখন একজন ট্রান্সজেন্ডার যে কিনা আগে পুরুষ ছিল । এখনও সে পুরুষই আছে । তবে সে নিজেকে এখন সে মেয়ে মনে করছে । এই মেয়ে মনে করার ফলে সে যদি লেডিস টয়লেটে গিয়ে ঢোকে তখন?
আমি আসলে কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার ধার দিয়ে যাচ্ছি না। এখন আপনি কল্পনা করুন যে আপনার বউ/মেয়ে/মা/ ভাগ্নি যে লেডিস টয়লেটে গিয়েছে সেখানে এমনই একজন ট্রান্সজেন্ডার নারী প্রবেশ করলো। এখন আপনার অনুভূতি কী হবে?
আপনি যদি মনে করেন যে হ্যা ওকে এখানে কোন সমস্যা নেই তাহলে ওকে আপনার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা স্বাভাবিক। আপনার সাথে আমার কোন বিরোধ নেই । তবে আমার ক্ষেত্রে এটা স্বাভাবিক না । আমি তাদের এই নারী মনে হওয়াটার বিরুদ্ধে বলছি না কিন্তু তাদের কারণে এই আমার মা বোন কিংবা ভাইয়ের মেয়ে যে অস্বস্তি এবং বিব্রত পর্যায়ে পড়বে, ক্ষেত্র বিশেষে বিপদেও পড়তে পারে, সেটার প্রতিকারের কথা বলছি। আমাদের দেশ যেহেতু এখনও ততটা উন্নত হয় নি, এতোটা উদার হয় নি তাই এটা একটা সমস্যা আমার জন্য । এই জন্য যেমন পুরুষ টয়লেট রয়েছে, নারী টয়লেট রয়েছে ঠিক তেমন প্রতিটি পাবলিক টয়লেটে একটা ট্রান্সজেন্ডার অংশ স্থাপন করা উচিৎ। নয়তো এটা অন্যান্য মেয়েদের বিব্রত পর্যায়ে ফেলে দিবে।
এরপর ধরেন মেয়েদের খেলাধুলার ক্ষেত্রে । একবার কল্পনা করেন বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট/ফুটবল টিম খেলতে গেছে । তাদের বিপক্ষ দলে ১১ জনের ভেতরে ১০ জনই এই রকম ট্রান্সজেন্ডার নারী । আমাদের নারী ক্রিকেট/ফুটবল টিম কি সেই দলের সাথে পেরে উঠবে?
স্বাভাবিক ভাবে চিন্তা করলে সেটা সম্ভব?
যদি দৌড় প্রতিযোগিতায় নারীদের বিরুদ্ধে ট্রান্সজেন্ডার নারীরা দৌড়ায় আপনার কী মনে হয় কে সুবিধা পাবে এবং কার প্রতি অবিচার করা হবে?
এমনটা করা হলে কি আপনার মনে হচ্ছে না ঐ নারী গুলোর প্রতি অবিচার করা হচ্ছে?
আবার আমি যদি বলি যে না আমি ট্রান্সজেন্ডারদের খেলতে দেওয়ার বিপক্ষে তাহলেও কিন্তু তাদের প্রতি অবিচার করা হবে । আমি তাদের খেলার বিপক্ষে না । কেবল স্বাভাবিক ভাবে নারী হয়ে যারা জন্ম নিয়েছেন তাদের সাথে প্রতিযোগীতার বিপক্ষে । তাহলে এখানে একটা অসম ক্ষেত্র তৈরি হবে এবং একপক্ষের উপর অবিচার করা হবে । তাদের জন্য আলাদা খেলার ক্ষেত্র তৈরি হোক যেখানে একজন ট্রান্সজেন্ডার নারী/পুরুষ অন্য আরেকজন ট্রান্সজেন্ডার নারী/পুরুষের সাথে প্রতিযোগীতা করবে।
এই রকম আরো কত ক্ষেত্র আছে লেডিস হোস্টেলে বা মেয়েদের হলে যদি ট্রান্সজেন্ডার নারী প্রবেশ করে তখন ?
আপনি চাইবেন আপনার মেয়ে সেই সেই হলের সেই রুমে থাকুক?
আমি চাইবো না।
একজন মানুষ তার ব্যক্তিগত জীবনে কী করবে তা নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই । এবং এটা নিয়ে কারোই মাথা ব্যাথা থাকা উচিৎ না । এমন কি সেটা আপনার ধর্মে মানা থাকলেও যদি কেউ তা করে সেটা যত সময় না দেশের প্রচলিত আইনের বিরুদ্ধে না যাচ্ছে সেটা নিয়ে আপনার মাথা ব্যাথা থাকা উচিৎ না । পৃথিবীতে আপনি যে ধর্মেই মানেন না কেন তার তিন চারগুন মানুষ অন্য ধর্মে বিশ্বাস করে । মানে হচ্ছে আপনি যে জিনিসটা ধ্রুব সত্য মনে করছেন তার তিনচান গুলো মানুষ সেটাকে মিথ্যা মনে করছে। এবং এতে পৃথিবীর কোন সমস্যা হচ্ছে না। কোন সমস্যা হবে না । সমস্যা তখনই হয় যখন আপনি আপনার বিশ্বাস অন্যের উপর চাপিয়ে দিতে চান।
Comments
Post a Comment