সকালের প্যাঁচাল - রাজনীতি




কদিন দিন থেকে অনলাইনে একটা আলোচ্য বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি । বিশেষ করে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে নানান আলোচনা হচ্ছে । ফেসবুকে ঢুকলেই মনে হচ্ছে এইবার বিএনপির জয় আর কেউ ঠেকাতে পারবে না । অবশ্য অনলাইনে বিএনপির প্রতি সমাবেশ পরেই অনলাইনে ঢুকলে এমনই মনে হয় । এইবারই ক্ষমতায় চলে যাবে তারা । শেখ হাসিনার পতন অনিবার্য । এই ঘটনা মোটামুটি ২০১৪ সাল থেকেই হয়ে আসছে । 


আচ্ছা আপনারা বলেন দেখি এই যাবৎ কালে আওয়ামীলীগ সব থেকে নড়বড়ে অবস্থায় কখন ছিল ? 

সময়টা হচ্ছে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগের সময় । হেপাজতের শোডাউনের সময় । সেই সময়ে বিএনপি জামাত হেপাজতের কাধে ভর করে এগিয়ে আসছিলো । এবং তাদের অস্ত্রও কিন্তু ছিল খুব শক্তিশালী । ধর্ম ! 

ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষের সমর্থন আদায় করেছিল তারা ! সাথে ছিল বাশের কেল্লা আর আমারদেশ পত্রিকা ! 


সেই সময়টা পার করে এসেছে শেখ হাসিনা খুব ভাল ভাবেই । তারপর থেকেই তিনি একটা ব্যাপারে খুব ভাল ভাবে মনযোগ দিয়েছেন তা হচ্ছে তার ক্ষমতায় থাকার জন্য যে যে বাঁধা গুলো ছিল সেগুলোর দিকে খুব ভাল ভাবে মনযোগ দিয়েছেন । তিনি শিক্ষা নিয়েছেন ইতিহাস থেকে । তার আগের শাসকরা যে কারণ গুলোর কারণে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে সেই ভুল তিনি করেন নি ।


বলেন দেখি শেখ হাসিনা কে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারে কে?


এক দেশের জনগন যদি গনআন্দোলন করে ।

দুই দেশের মিলিটারি ।

তিন সরকারি কর্মচারি, সচিবালয় । 


ক্ষমতায় এসেই তিনি একটা ব্যাপার নিশ্চিত করেছেন তা হচ্ছে কোন ভাবেই যেন দেশের মিলিটারি যেন ক্যু না করে বা না করতে পারে । সেই ব্যাপারে যত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সেটা নিয়েছে । কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন সেটা না হয় নাই বললাম । আপনারা জানেন বুদ্ধিমান । 


দেশের জনগন নিয়ে তার খুব একটা চিন্তা ছিল না আসলে । দেশে এখনও বিপুল সংকখ্যক আওয়ামী সমর্থক আছে । এটা কোন ভাবেই অস্বীকার করার কোন উপায় নেই । সুতরাং এই সমর্থন দিয়েই বাকি সবাইকে ঠেকানো যাবে মাঠে । বাকি থাকলো সরকারি কর্মচারি সচিবালয় । আপনাদের এরশাদের আমলের কথা মনে আছে নিশ্চিয় । যখন তীব্র গনআন্দোলন করেও এরশাদকে হটানো যাচ্ছিলো না তখন কাদের কারণে এরশাদ নেমে যেতে বাধ্য হয়েছিলো ! 

হ্যা এই সচিবালয়ের কারণেই । যখন তার সেক্রেটারিেয়ট পদত্যাক করলো তখন এরশাদের পক্ষে কোন ভাবেই দেশ চালানো সম্ভব ছিল । শেখ হাসিনাও এটা খুব ভাল করে জানেন । যত সময় তার হাতে সচিবালয় আছে ততসময়ে তাকে কেউ গদি থেকে নামাতে পারবে না ।২০১৪ নির্বাচনের আগে তীব্র গন্ডগোল শুরু হয়, ঢাকা কে কার্যত পুরো দেশ থেকে আলাদা করে ফেলা হয় তারপরেও শেখ হাসিনার লক্ষ্য ছিল যাতে করে কোন ভাবেই ঢাকার নিয়ন্ত্রণ যাতে হারায় । সেটা ধরে রেখেছিলেন । এবং নিজের চেয়ার কেও । 


এখন বর্তমানে সকল সরকারি কর্মচারি, সচবিলায় তার নিয়ন্ত্রনে । পুরো দেশ বিপক্ষে চলে গেলেও তিনি দেশ চালাতে পারবেন । কারণ তার দেশ চালাতে যা যা লাগে যাদের যাদের লাগে সব তার দলে। আর অবস্থাটা এমন পর্যায়ে গিয়ে দাড়িয়েছে যে সচিবালয় কিংবা কর্মচারিদের আসলে সাথে না থেকেও উপায় নেই । কেন নেই সেটাও আপনাদের অজানা নয় ।


শেখ হাসিনা দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানেন সব থেকে বেশি । দেশের মানুষ কী ভাবছেন আর কী করলে তাদের ভাবনাকে কাবু করা যাবে সেটা তার থেকে ভাল আর কেউ জানে না । সত্যি জানে না । আপনি শেখ হাসিনাকে পছন্দ করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন । সে ভাল কাজ করছে কী খারাপ কাজ করছে সেটা নিয়েও আলোচনা করতে পারেন কিন্তু সে দেশে সম্পর্কে জানেন না কিংবা রাজনৈতিক চালে ভুল করছে এমন কথা যদি আপনার মনে হয় তাহলে আপনি একটা রাম বোকাচন্দ্র ! শব্দটা অন্য একটা শব্দ হবে  । সামুতে সরাসরি গালি দেওয়া যায় না তাই দিলাম । তবে ধরে নিন আপনি আসলে সেটাই ।


দয়া করে শেখ হাসিনাকে পরামর্শ দিবেন না । যে যোগ্যতা আপনার বাবার কেন, আপনার দৌদ্দগোষ্ঠীর কারো নেই । আপনার বাদ দাদা সহ চৌদ্দ গোষ্ঠীর রাজনৈতিক বুদ্ধি এক করলেও শেখ হাসিনার ধারে কাছে আপনারা কেউ যেতে পারবেন না । 

Comments